Bholar Girja: বাবা তারকনাথ সিনেমার শ্যুটিং ও ভোলার গির্জা

Bholar-girja-at-nalikul-a-historical-importance
বাবা তারকনাথ সিনেমার সেই বিখ্যাত দৃশ্য


ইতিহাসের (History) নীরব সাক্ষী হিসেবে আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে হুগলি-কামারকুণ্ডু ১২ নম্বর রাস্তার পাশে ভোলার গির্জা (Bholar Girja)। গির্জা বলা হলেও এটি আসলে একটি মিনার। এটি তৈরি হয়েছিল প্রায় ২০০ বছর আগে। অনাদরে, অবহেলায় এভাবেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইতিহাসের এই টুকরো। ইতিহাসই বটে। এই মিনারের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে মাউন্ট এভারেস্ট, প্রথম বাঙালি জরিপ বিশারদ রাধানাথ শিকদারের মত কতশত নাম। হ্যাঁ, এই মাউন্ট এভারেস্টের নামেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নামকরণ। আরও আছে। তারকেশ্বরের জল যাত্রা নিয়ে একটি সিনেমা বানিয়েছিলেন পরিচালক সুনীল বন্দোপাধ্যায় এবং বরেণ চট্টোপাধ্যায়। সেই সিনেমার শ্যুটিং হয়েছিল শ্রীরামপুর-তারকেশ্বর রোডে। অন্যতম চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সন্ধ্যা রায় এবং বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। গৌরীপ্রসন্ন মুজমদারের লেখা ‘আজ তোমার পরীক্ষা.. ভগবান’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় সেই সিনেমা। সেই সিনেমাতে ‘ভোলার গির্জা’র ছবি পাওয়া যায়। সন্ধ্যা রায় জল নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। পথ শ্রমে ক্লান্ত সন্ধ্যার জল পড়ে যায়। সেটি ছিল এই ভোলার গির্জার কাছেই।

এবার আসা যাক ইতিহাসে। ভারতকে শাসন করার জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসকদের একটি মানচিত্র তৈরির প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ভারতে তখনও শেরশাহের দেখানো পথেই জমি, কর নেওয়া হত। এতে কোনও আধুনিকতা ছিল না। তাই বিজ্ঞানসম্মত পথে একটি মানচিত্র তৈরির প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ১৮০২ সালে উইলিয়ম ল্যাম্বটনের নেতৃত্বে ব্রিটেনে এই ধরনের জরিপ করা হয়। এর দু’দশকের ব্যবধানে ভারতেও চালু হল জমি জরিপ প্রকল্প। ভারতে এই জমি জরিপের নেতৃত্বে ছিলেন মাউন্ট এভারেস্ট এবং তাঁর সহকারী রাধানাথ শিকদার। ১৮৩০ নাগাদ এই প্রকল্প শুরু হয় ভারতে। আর শেষ হয় ১৮৭১সালে। ভোলার গির্জাটি এর কোনও একটি সময়ে বানানো। 

কেন মিনার বানানোর প্রয়োজন পড়ে? 

এই জরিপটাকে বলা হয় থিওডোলাইট সার্ভে।  অফিসিয়াল নাম গ্রেট ত্রিগনোমেট্রিক সার্ভে। জরিপের সময় কিছু নিশানা লাগে। সে সময় ছিল ধূ ধূ প্রান্তর। কোনও নিশানা পাওয়া গেল না। অগত্যা মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এক একটির উচ্চতা ছিল প্রায় পঞ্চাশ ফুট। এর কোনটি চৌকা আকৃতির। আবার কোনটি গোলাকার। ভোলার গির্জাটি চৌকা আকৃতির। কলকাতার বিটি রোডের পাশের মিনারটিও চৌকা আকৃতির। অন্যদিকে, জাঙ্গিপাড়ার দিলাকাশের মিনারটি গোলাকার। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ